Friday, February 11, 2022

মুঘলাই রোশনাই


কথায় আছে, কালি–কলম–মন, লেখে তিনজন। আমি বলি, ইচ্ছে–সঙ্গী–রেস্ত, খাদ্য পাবেন বেশ তো! খাওয়ার ব্যাপারটা এমনই, যে আপনি চাইলেও এড়িয়ে থাকতে পারবেন না, এবং সমমনস্ক বন্ধুবান্ধব, সে ঠিকই জুটে যাবে!  কল্লোলিনী তিলোত্তমা, সিটি অফ জয়, মিছিল নগরী, কলকাতার বহুরূপী ছাঁদ, ধরা ভারী মুশকিল। আমি আবার বৈদুর্য্য রহস্যের মদন বোসের মতোই শহরটার ডিসকমফোর্ট ছাড়া বেশিদিন থাকতে পারিনা। 

তা হলো কি বুঝলেন, গতবছর, এই জানুয়ারি মাসের শেষেই একদিন কথা হচ্ছিলো বন্ধু দেবাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়, আর শান্তনব রায় বাবুর সাথে, আমাদের বহুদিনের ইচ্ছে যে চীনে পাড়ায় ছোটা হাজরি, মানে ব্রেকফাস্ট, ওটি সারার। সে শুনেছিলাম সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে না গেলে অমিল, তাই আমরা গুটিগুটি পায়ে হাজির হয়েছিলাম, দিব্যি নানাবিধ চীনে সুখাদ্য, এক্কেবারে গরমাগরম, তারপর বাগবাজার ঘাটে, এবং দ্বিতীয়াংশ প্রসারিত হয়েছিলো উত্তর কলকাতার নামজাদা কিছু স্থানে, যথা চিত্তবাবু, সাবির, কফি হাউস, দেলখোসে কেবিন, প্যারামাউন্টে। সঙ্গী ছিলেন কৌশিকী গুপ্ত, অরিজিৎ সেন, জাভেদ ইসলাম, স্নেহাশীষ গাঙ্গুলিরা। 

আমরা যখন চীনেপাড়ায় প্রাতরাশ সমাপনের দিকে এগোচ্ছি, তখন বন্ধ রেস্তোরাঁগুলির দিকে নজর পড়ায় জিগ্যেস করে জানা গিয়েছিলো সেগুলো খোলে সকালে এগারোটার পরে। তখনই একটা চটজলদি বৈঠকে স্থির করা গেছিলো, একবার আসতে হবে বৈকি, চীনে খাদ্যের মাধ্যমে রসনা তৃপ্তি তো অবশ্যই করা উচিত! 

এর পরে আমরা গতবছর, অর্থাৎ ২০২১ সালে, এই অতি মারী, নৈরাশ্য, বাধাবিঘ্ন এসব পাশ কাটিয়ে এক এক করে চীনে ফুড ট্যুর, এবং আরেকটি বহু প্রতীক্ষিত পার্শী ফুড ট্যুর, যার সন্ধান দিয়েছিলো আমার আরেক বন্ধু সপ্তর্ষি দেববর্মন ,সেগুলো সমাপন করি। আমাদের সাথে আসে জয়ী চক্রবর্তী, অরিজিৎ ঘোষ, নিরূপম দেব, অন্বেষা চক্রবর্তী প্রমুখ খাদ্যরসিক মানুষজন। কি বলুন তো, সঙ্গী খুবই প্রয়োজন, মনের ভাব আদান-প্রদান এবং বিকাশের জন্য, এইটে আমার ভাবনা। 

এছাড়াও আমরা টুকটাক দুয়েকটা খাদ্য অভিযান করেছি, নতুন, পুরনো, নামকরা, অখ্যাত সবকিছু না জানলে আর খেয়ে লাভ কি? সেরকমই, কিছুদিন আগে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে গেছিলাম "ওয়াহ্ জনাব", পার্ক সার্কাসে, ইচ্ছে ছিলো নিহারির, কিন্তু সেসময় সেটি না মেলায় খেয়েছিলাম কেবাব, কেবাবের প্ল্যাটার, নানারকম সুন্দর কেবাবের সমাহার, বীফ, এবং চিকেনের। বড়ো ভালো লেগেছিলো, এবং সেখান থেকেই আমাদের আগে থেকে স্থির করা মুঘলাই খাদ্য অভিযানের তালিকায় এটিকে স্থান দিই। 

মুঘল রাজত্বের সময়কালে, বাবর থেকে বাহাদুর শাহ্ জাফরের সুদীর্ঘ সাম্রাজ্যর একটি প্রধান অংশ ছিলো তাদের খাদ্যাভ্যাস, একেকজন একয়েকরকম খাদ্যের অনুরাগী ছিলেন, কেউ বা পরীক্ষানিরীক্ষাতেও পিছপা হতেন না, কেউ ছিলেন সোজাসাপ্টা। তা, আকবর ভদ্রলোক এই আধুনিক মুঘলাই খানার কিছু অবিচ্ছেদ্য অংশের জন্য দায়ী বটে, সে মুর্গমসল্লম হোক, বা নবরত্ন কোর্মা (নবরত্নের প্রতি বেশ আকর্ষণ ছিলো, কি বলেন)? তেমনই আবার জাহাঙ্গীর সাজিয়েগুছিয়ে খেতে ভালোবাসতেন, মানে তাঁর খাদ্যগ্রহনের সময় অলঙ্করণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতো, যাকে বলে দস্তরখ্ব্যান বেশ সাজানো হতে হতো, আর স্ত্রী নূরজাহানের পটুত্ব ছিলো খাবারের সজ্জাতে, কখনো রামধনু রঙের দই, অথবা সুরা, সবেতেই একটা সৌন্দর্যের আবহ প্রকাশ করতেন বলে শুনেছি। 

সে যাক, আমি মশাই ইতিহাসের ছাত্র নই, বেশিক্ষণ ধান ভানতে শিবের গীত গাইলে বিরক্ত হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই, এবার মাঠে নেমে পড়া যাক, আমড়াগাছি তো হলো! এবার আমাদের খাদ্য সফরের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো আমার বাল্যবন্ধু রজত ব্যানার্জি, যে মাত্র তিনদিনের জন্য কলকাতায় এসেছিলো, এবং আমাদের এই প্ল্যানের কথা শুনেই সোৎসাহে রাজি হয়ে গেলো যোগ দিতে! এছাড়াও আমি, রায় বাবু, দেবাঞ্জন, জাভেদ ইসলাম, অরিজিৎ ঘোষ দা, জয়ী চক্রবর্তী দিদি, আর নতুন সদস্য সুদীপ্ত সাহা অভি দা, যারা সকলেই খাদ্যরসিক। 

প্রথম যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো, তা হলো বিরিয়ানি আমাদের আজকের অভিযানে থাকছেনা। সকলেই কমবেশি সেটা খেয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় খেয়েছে, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খেয়েছে, বিভিন্ন মেজাজে খেয়েছে, তা-ই আজ নয়, আজ অন্যকিছু। তা-ই আমরা, মানে আমি আর রায় বাবু মিলে ঠিক করলাম কটি জায়গায় যাবো, এবং কি কি খাবো, সেটা বাকিদের জানানোর পরে কেউই আপত্তি করেনি, ভরসা কি একদিনে আসে মশাই? হুঁহুঁ!! 

সকাল থেকে প্রস্তুতিপর্ব সেরে আমি, দেবাঞ্জন, রজত, আর জাভেদ পৌঁছে গেলাম পার্ক সার্কাসে, যেখানে উড়ালপুলের পাশেই অবস্থিত "ওয়াহ্ জনাব" রেস্তোরাঁ। স্বল্প সময় আগে রায় বাবু পৌঁছে গেছিলো, আস্তে আস্তে আমরা ঢুকলাম রেস্তোরাঁর অভ্যন্তরে, তখনও সেখানে গোছগাছ চলছে, আধঘন্টা অপেক্ষা করতে হবে জানালেন কর্মচারীরা। বেশ কথা, নাহয় অপেক্ষা করবো, ভালো কিছু পেতে গেলে অপেক্ষা করাটাই দস্তুর, এতদিনে বুঝে গেছি! ঠাণ্ডা পানীয় অর্ডার করতে না করতেই এসে পড়লো জয়ী দি, আর সুদীপ্ত দা, অরিজিৎ দার সাথে কথা হলো খানিকক্ষণ পরেই আসছে, রাস্তাতেই আছে! প্রাথমিক আলাপ পরিচয় পর্ব মেটার পরে, কারণ রজতের সঙ্গে আমার আর দেবাঞ্জন ছাড়া কারোরই আলাপপরিচয় ছিলোনা, আমরা দিলাম এইবার খাবারের ব্যাপারে দৃষ্টিপাত, আলোকপাত করা যাক। সেই অনুযায়ী, আমরা বীফ প্ল্যাটার, এবং চিকেন প্ল্যাটারের অর্ডার দিলুম।

দুটি প্ল্যাটারেই নানাবিধ কেবাবের সমাহার। বিফ প্ল্যাটারে পেলাম কাকোরি কেবাব, মাখখনি কেবাব, বোটি কেবাব, এবং রেশমি কেবাব। প্রতিটি কেবাবের ঘ্রাণ নাসারন্ধ্র থেকে মস্তিষ্কে পৌঁছাতেই মশলা দিয়ে জারিত সুসিদ্ধ মাংস, পুদিনার চাটনি, সালাড, এই সংমিশ্রণ বুঝলেন, খুবই লজ্জার ব্যাপার, মানে না খেলে লজ্জা পেতেই হবে!! চিকেনের প্ল্যাটারেও তেমনই টাঙড়ি কেবাব, সুলা কেবাব, রেশমি কেবাব, এবং লেহ্সুনি কেবাব। প্রত্যেকটির একে অপরের সাথে পার্থক্য, এবং মেলবন্ধন, দুটিই বোঝা যাচ্ছিলো। সুভদ্র মালিকের সঙ্গে আলাপ হলো, আমাদের আলোচনা শুনে তিনি নানান গল্প করলেন, কিভাবে সাত সাতবার জায়গাটির হাতবদল হয়েছে, এবং আমন্ত্রণ জানালেন তাঁদের বিফ মালাই একবার চেখে দেখতে! সেসব পাট চুকিয়ে এবার আমাদের গন্তব্য ছিলো জমজম! 

দাঁড়ান, দাঁড়ান, শুধু খাবার গপ্পো শুনবেন? আমি আছি, শুধু এসবই হবে, তা হয় নাকি? পার্ক সার্কাস সাত মাথার মোড় থেকে এগোবার সময়েই হঠাৎ দেখি ডানপায়ের জুতো দিয়ে দিয়েছে জবাব!!! সব্বোনাশ, কি হবে ভাবতে ভাবতে এগোচ্ছি, দেখি, বাঁ পায়ের জুতোর সোল বলছে, "আমি আসি, আমি আসি!" কি মুশকিল বলুন দিকি!! যা-ই হোক, বন্ধুরা খুঁজে পেলো আমীর আলী অ্যাভিনিউয়ের কোণের দোকানটি, দোকান, এবং মালিক, দুজনেই আমার সমকালীন, যাকগে! নয়া চটি পায়ে গলিয়ে, দুশমন পুরানো জোড়াকে বিসর্জিত করে এগোলাম পল্টন নিয়ে "জমজম"।

আগেই ভেবে রেখেছিলাম এখানে বিফ মালাই তো স্বাদ নেবোই, আর কি দেখা যাক! খানিকক্ষণ অপেক্ষা করার ফাঁকে একপ্রস্ত চা পান, ধূমপান করে বসা গেলো শীতাতপনিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত রেস্তোরাঁয়। ভালো মানুষ ওয়েটার এসে নিয়ে গেলো অর্ডার, যথাক্রমে বিফ মালাই, চিকেন মালাই কেবাব, তন্দুরি রুটি, এবং মিষ্টান্ন রসিক রজতের প্রস্তাবিত শাহী টুকড়া, এবং ফিরনি। বিফ মালাই নিয়ে কথা বলাটাই কালক্ষেপ, খেয়ে দেখলে বোঝা যায়, অবশ্যই যাঁরা খান, অন্যদের জন্য চিকেন মালাই কেবাবও সুস্বাদু, নিরাশ হওয়ার প্রশ্নই নেই। তবে, আমি বাপু মিষ্টি খুব একটা ভালোবাসিনা, তাই ঐ ফিরনি, আর শাহী টুকড়া, মন টানলোনা। ইতিমধ্যে জাভেদের বান্ধবী, ইকরা রেহমান, আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এলো। ভারী চমৎকার মেয়ে, প্রথম আলাপ মনেই হয়নি। 

বেশ বেশ, এইসব সুখাদ্য গ্রহণের পরে স্বাদকোরক থেকে শুরু করে পাচনতন্ত্র, সবই তো মজে গেছে, তাই খানিকটা গপ্পোসপ্পো করে ইকরা বিদায় নিলো, আর ওরই পরামর্শে আমরা অটো পাকড়ে গেলুম ধর্মতলা! সেখানে আমাদের গন্তব্য ছিলো ইউ পি বিহার রেস্তোরাঁয়! নিউ মার্কেটে অবস্থিত এই খাদ্যস্থানটি অন্যগুলোর মতো সুসজ্জিত না বটে, কিন্তু আসল তো মশাই খাবার!! আহহা, বৃদ্ধ ওয়েটার এনে দিলেন যে মাটন কেবাব, ভেজা ফ্রাই, ক্ষীরি কেবাব, বিফ নিহারি, এবং তন্দুরি রুটি, প্রতিটি পদই এ বলে আমাকে দেখ, ও বলে আমাকে দেখ!! আড্ডা, গল্প, ছবি তোলা( এটি নাহলে তো উরিব্বাস!!) এসবের পালা সাঙ্গ করে আমরা যখন ক্ষান্ত দিলাম, সবাই-ই একমত, যে, আজ বিরিয়ানি বাদ রেখে, এবং পরবর্তীতে জাকারিয়া স্ট্রিট স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত একেবারে ঠিক! কারণ, জাকারিয়া স্ট্রিট শুধুমাত্র নিজের জন্যই একদিন দাবী করে। 

ধর্মতলায় এসব খেয়েদেয়ে সবার মনে হতে লাগলো একটু মিষ্টিমুখ না করলে হয়? আমি মিষ্টি খুব একটা ভালোবাসিনা, কিন্তু কাছেই কে সি দাস, একবার ঢুঁ মারতে ক্ষতি নেই। তা, সেখানে যাওয়ার আগে রজত নিলো এবারকার মতো বিদায়, ব্যাঙ্গালোরে ফেরার প্রস্তুতিপর্ব কিছু বাকি আছে। আমরা ক'জন মিলে গেলুম, এবং গিয়ে নানারকম মিষ্টি দুয়েকটা করে বলা হলো! জয়ী দির সুপারিশে আমরা খেলুম কেশর পেস্তা মিষ্টি দই, এছাড়া কেউ রাজভোগ, কেউ জলভরা, কেউ আমভরা, কেউ কালোজাম, আমি আবার সাধ করে বললাম মালপো খাবো( যদিও পুরোটা খেতে পারিনি)। 

এইসব সুন্দর জায়গায় সুন্দর মানুষদের সঙ্গে সুন্দর খাবার, দিন সুন্দর হবেই!! মধুরেণসমাপয়েৎ একেই তো বলে, তবে ফেরার পথে আমি, রায় বাবু, দেবাঞ্জন, আর জাভেদ এককাপ করে চা, আমাদের আরেকটা আড্ডার জায়গা, লেক মার্কেটের রাধুবাবুর দোকানে খেতে ভুলিনি। 

আমাদের মূল উদ্দেশ্য স্রেফ খেয়ে বেড়ানো নয়, সে তো আমরা সবাই-ই কখনো না কখনো করিই, মূল নির্যাসমিশ্রিত থাকে এই আনন্দের অবকাশে, এই আড্ডা, হাসি, মজায়, ঐ যে, কেউ একজন বলে গেছেন, 

"আনন্দধারা বহিছে ভুবনে,
দিনরজনী কত অমৃতরস উথলি যায় অনন্ত গগনে", 

রবীন্দ্রনাথ তো, ঠিকই বলেছেন। 😊









Wednesday, February 9, 2022

"সে কি আমায় নেবে চীনে?"





এই বছরের শীতের সময়, জানুয়ারী মাসে, আমরা কয়েকজন খাদ্যপ্রেমী, বেরিয়ে পড়েছিলাম কলকাতার নানাবিধ খাদ্যের রসে রসনা তৃপ্তির উদ্দেশ্যে। সেকথা লিখেছি, তা সেই বারই ভেবেছিলাম, এই পথ শেষ করে দেওয়া যাবেনা, অন্তত আরো বার কয়েক এদিক-ওদিক যাওয়াটা উচিত, নইলে কালের নিয়মে আমরা আফশোস করবো। তা, সারা পৃথিবীতে তো জানিই কি চলছে, তাই বেশ কয়েক মাস এই পবিত্র কর্তব্য ছিলো স্থগিত। কিন্তু, সে আর কতদিন আটকে রাখতে পারে? তাই, আজ, শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে আমরা কয়েকজন আবারও বেরোলাম চীনেপাড়ায়, এবং আরো কিছু চৈনিক রেস্তোরাঁয় অল্পবিস্তর খাদ্য চেখে দেখতে। গতবার যারা ছিলো, তাদের কয়েকজন আসতে না পারার দুঃখ তো ছিলো বটে, তবে নতুন কিছু খাদ্যরসিক এবারে আমাদের সঙ্গী হলো। 

এবারে আমরা স্থির করেছিলাম শুরু করবো দুপুরের খাবারের সময়, কারণ রেস্তোরাঁগুলো তেমন সময়েই খোলে। প্রথমেই গেলাম "টুং নাম" রেস্তোরাঁয়, যেখানে খাস চীনে খাবারের সুঘ্রাণে ম-ম চারদিক, আমরা নিলাম ফ্রায়েড চিকেন ওয়ান্টন, ফ্রায়েড পর্ক ওয়ান্টন, চিকেন মেইফ্যুন স্যুপ, এবং ড্রাই গার্লিক পর্ক। প্রতিটি পদই যাকে বলে দারুণ আনন্দের ব্যাপার, স্বাদকোরক আশ্বস্ত হলো

fried pork, tung nam eating house, kolkata foodie, kolkata street food, bengali food blog









, যে হ্যাঁ, প্রথম ধাপেই সুন্দর একটা ড্রিবলিং দেখতে পেলাম। খুব সুন্দর একটা আবহ নিয়ে এবার গমন "পাও হেং" এর দিকে, যা একেবারেই পায়ে হাঁটা রাস্তা। নিজেদের মধ্যে খাবারের প্রশংসা করতে করতে সেখানে গেলাম, বাছাই করে বললাম  এখানে খাওয়া যাক মাছ, মৎস্যপ্রিয় বাঙালি বলে কথা; তা এলো যথাক্রমে প্যান ফ্রায়েড ফিশ, ফিশ ওপালো, এবং প্রণ ইন হট গার্লিক; নরম ভেটকির ফিলে, চীনে মশলা, এবং পাকপ্রণালীর গুণে তখন হয়ে গেছে অমৃত, বেশ ভালো লাগলো। চেখে টেখে বেরোলাম যখন, তখন সবাই-ই খুশী, কারণ এসেছি যার জন্য, সে নিরাশ করেনি তখনো পর্যন্ত। গন্তব্য এবার "ইউ চিউ", সামান্য দূরে, বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটে, ছিমছাম সুন্দর পরিবেশে বসে অর্ডার দেওয়া গেলো প্রথমে গলা ভেজানোর জন্য লাইম সোডা, এবং জেসমিন টি, অভিজ্ঞতা অর্জন করতে ক্ষতি কি? সেসব গলাধঃকরণ করার পরে বলা গেলো, নিয়ে আসুন ম্যান্ডারিন ফিশ, রোস্টেড চিলি পর্ক, এবং মিক্সড হাক্কা নুডলস। এবারেও খেলা জমে উঠলো, প্রতিটি কুশীলব মনোরঞ্জন করলো অতীব সুন্দর ভাবে। চীনেপাড়ায় আমাদের পর্বের প্রথম ভাগ যাকে বলে "ডি লা গ্র‍্যান্ডি মেফিস্টোফিলিস ইয়াক ইয়াক"!!! (টেনিদার মতো খাদ্যরসিক হয় ক'জন?) 

এবার পাড়ি দক্ষিণের দিকে, দুয়েকটা জায়গায় যাওয়া বাকি। ট্যাক্সি ছুটলো হাজরা রোডের নু ওয়ান লি, অবশ্য সেখানে দেখা গেলো দরজা বন্ধ, মানে তখনও বৈকালিক বাণিজ্যের সময় হয়নি আরকি, যাই হোক, আমাদের আগমনের ফলে তা আরম্ভ হলো, আবারও এক প্রস্থ লাইম সোডা দিয়ে গলা ভিজিয়ে অর্ডার দেওয়া গেলো চিমনী স্যুপ, আর ক্রিসপি চিকেন। এই চিমনী স্যুপের অভিনবত্ব বেশ মনোগ্রাহী, জ্বলন্ত চিমনীর উপরে ধাতব আধারে খাদ্যসামগ্রী, এবং ক্কাথ, অর্থাৎ স্যুপ তৈরি হচ্ছে, খেতে অসাধারণ, এবং নতুনত্ব তো বলাই বাহুল্য। সেসবের পালা শেষ করে আমরা যখন বেরোলাম তখন প্রাণ চায়, উদর না পারে.. নইলে আজ এলগিন রোডের টিবেটান ডেলাইট, আর কেয়াতলার টাক হেংও তালিকায় ছিলো( পরদিন হবে বলে রেখেছি)।

এসব শেষ করে মধুরেণসমাপয়েৎ করলাম জনক রোডের " ব্লু টোকাই"তে, সেখানে শুধুই পানীয়, যাকে বলে এনার্জি নেওয়া, এবং তারপর যে যার গৃহগামী। 
দুর্দান্ত একটি দিনের জন্য সবাইকে অনেক অনেক ভালোবাসা ❤️

দলের নব সদস্য অন্বেষা চক্রবর্তী, এবং আমাদের প্রিয় অরিজিৎ ঘোষ দা অসাধারণ স্পিরিটের অধিকারী, যেমন ঘোরাঘুরি করতে সক্ষম, তেমনই খাদ্যরসিক। আমার বাল্যবন্ধু দেবাঞ্জন চ্যাটার্জি, পরম সুহৃদ শান্তনভ রায় বাবু  এবং ভ্রাতৃপ্রতিম স্নেহাশীষ গাঙ্গুলি, তোমাদের সাথে বেরিয়ে এমন সুন্দর দুবার দিনযাপনের কথা মনে রাখবো, এবং অপেক্ষায় থাকবো, মোগলাই খানা দিয়ে উদযাপন করার জন্য। 

এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে দারুণ হতো, আমি বলি যে 😍

Monday, February 7, 2022

অচেনা বেনারসের খোঁজে



বেনারস.... ভারতবর্ষ তথা গোটা পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এক শহর। আনুমানিক ৫০০০ বছর বা তার চেয়েও পুরানো এই শহরের আনাচে কানাচে লুকিয়ে আছে কতো কাহিনী। কতো জানা অজানা ইতিহাস। আর সুপ্রাচীন এই নগরীর সঙ্গে বাঙালির যোগ কিন্তু বহু পুরোনো। পূণ্য ধাম কাশী বিশ্বনাথে পুজো দিতে যাননি এইরকম বাঙালির সংখ্যা বোধহয় হাতে গোনা। তাছাড়া বাংলা সাহিত্যে বিভিন্ন সময়ে বেনারস বা কাশীর বিশেষ উল্লেখ শহরটাকে আপামোর বাঙালি জাতির বড় কাছের করে তুলেছে। আজ তবে সেই ঐতিহাসিক শহরের গল্পই হোক... তবে একটু অন্যভাবে।

২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে একদিন অফিস থেকে ফিরে চা খাচ্ছি। টিভিতে বেনারসের গঙ্গার ঘাটে সন্ধ্যাআরতির ওপর একটি তথ্যচিত্র দেখাচ্ছিল। সহধর্মিণী মিতা হঠাৎ বলে উঠল "আজ অব্দি বেনারস যাওয়া হয়নি... একবার ঘুরে আসলে মন্দ হয়না"। সেবার বিশেষ কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয়নি। মনটাও কোথাও যাওয়ার জন্য উসখুস করছিল কদিন ধরেই। তাই সাত পাঁচ না ভেবে যাত্রার দিনক্ষণ ঠিক করে ট্রেনের টিকিট কেটে রওনা দিলাম। সেবার বিশ্বনাথ মন্দিরে পুজো দেওয়া, গঙ্গা আরতি দেখা, যন্তর মন্তর দেখা, রামনগর গিয়ে কাশীর রাজাদের প্রাসাদ দেখা, বিশ্বনাথ গলির রাবড়ি চেটে পুটে খাওয়া এবং বেনারসের বিখ্যাত পান খেয়ে ঠোঁট লাল করা... এসব তো করেইছিলাম। এছাড়াও আরও কয়েকটি স্বল্পপরিচিত জায়গায় ঘুরেছিলাম। আজ বরঞ্চ সেবারে ঘুরে দেখা ৫টা স্বল্পপরিচিত জায়গার গল্পই শোনানো যাক। যাঁরা এইসব জায়গাগুলোর ব্যাপারে খুব একটা জানেন না তাঁদের কিছুটা পরিচিতি হয়ে যাবে। আর যাঁরা আগেই গিয়েছেন এইসব জায়গায় তাঁদের স্মৃতিচারণ হয়ে যাবে।

১. তিলভান্ডেশ্বর মন্দির - বাংলায় একটা প্রবাদ আছে "বিশ্বাসে মেলায় বস্তু তর্কে বহুদূর"। প্রবাদটি এই স্থান বা বলা ভালো এই মন্দির সম্পর্কে খুব কার্যকরী। কাশী বিশ্বনাথ মন্দির থেকে মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই তিলভান্ডেশ্বর মন্দির। ১৮ শতকে নির্মিত এই মন্দিরের পূজিত দেবতা মহাদেব। মন্দিরের নির্মাণকাল ১৮ শতক হলেও পূজারীর কথা অনুযায়ী শিব লিঙ্গটি স্বয়ম্ভু লিঙ্গ এবং প্রায় ২৫০০ বছরের পুরোনো। অর্থাৎ মন্দির প্রতিষ্ঠার বহু আগে থেকেই লিঙ্গটি পূজিত হয়ে আসছে এখানে। তবে আসল রহস্য কিন্তু এই শিব লিঙ্গটিকে ঘিরে কাহিনী নিয়ে! কথিত আছে প্রতি বছর লিঙ্গটি নাকি আকারে এক তিল করে বৃদ্ধি পায়! কিভাবে এই ঘটনা ঘটে তার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা অবশ্য নেই.... তবে প্রতিবছরই এই ঘটনা অবশ্যই ঘটে। গল্পটি বিশ্বাস অবিশ্বাসের যার যার নিজের ওপর। তবে কোন পান্ডা না থাকায় বেশ শান্তিতে পুজো দিতে পেরেছিলাম এখানে।

tilbhandeswar temple, varanasi, travel, history

তিলভান্ডেশ্বর মহাদেব বিগ্রহ

২. সংকটমোচন মন্দির - নামেই বোঝা যাচ্ছে মন্দিরের আরাধ্য দেবতা হনুমান। বিশ্বনাথ মন্দিরের সামনে থেকে অটো ধরে পৌঁছে গেছিলাম সংকট মোচন মন্দিরে। হনুমানের একটি বিশাল বিগ্রহ আছে এখানে এবং ভক্তদের ভীড় লেগেই থাকে সবসময়। পুজো দিতে গেলে একটু সাবধান থাকতে হবে কারণ প্রচুর বাঁদর চারপাশে ঘুরে বেড়ায় সর্বক্ষণ! কথিত আছে মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা স্বয়ং তুলসিদাস! এখানেই তিনি হনুমানের দর্শন লাভ করেন এবং তাঁর বিখ্যাত কাব্য ' রামচরিত মানস ' রচনা করেন। 

sankatmochan temple, varanasi, history, travel

সংকটমোচন মন্দিরের বিগ্রহ

৩. কেদারেশ্বর মন্দির - প্রাচীন এই মন্দিরটি বেনারসের কেদার ঘাটে অবস্থিত। মন্দিরের শিব লিঙ্গটি কেদারনাথ মন্দিরের লিঙ্গের আদলেই তৈরী। যদিও কারও কারও মতে এই লিঙ্গটিও স্বয়ম্ভু লিঙ্গ। মন্দিরটি এখানকার অন্যতম জনপ্রিয় মন্দির। ভেতরে প্রবেশ করা মাত্র মনে হয়েছিল সময় যেন এখানে কোনও জাদুবলে থমকে দাঁড়িয়ে আছে! 

kedareshwar temple, varanasi, travel, history

কেদার ঘাটে কেদারেশ্বর মন্দির

৪. হরিশচন্দ্র ঘাট - বেনারস এসেছে অথচ মনিকর্ণিকা ঘাটের নাম শোনেননি এইরকম লোকের সংখ্যা হয়ত খুবই কম। কিন্তু হরিশচন্দ্র ঘাটের নাম খুব বেশি লোক বোধহয় জানেন না! অথচ স্থানীয় মতে বেনারসের অন্যতম প্রাচীন ঘাট গুলির মধ্যে একটি এই হরিশচন্দ্র ঘাট। মনিকর্ণিকার মতোই এখানেও শবদাহ করা হয়। মনে করা হয় পুরাণের বিখ্যাত রাজা হরিশচন্দ্র রাজত্ব পরিবার সব ত্যাগ করে এখানেই শবদাহের কাজ করতেন!

৫. সারনাথ - বেনারস থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত সারনাথ। এক সময়ের জগৎ বিখ্যাত বৌদ্ধ মঠ ছিল এই সারনাথ। বলা হয় এখান থেকেই প্রথম ভগবান বুদ্ধ ধর্ম শিক্ষা প্রদান করেন! এছাড়া বৌদ্ধ 'সংঘের' শুরুও এই সারনাথ থেকেই! আমাদের জাতীয় প্রতিক অশোক স্তম্ভ প্রথমে এখানেই রাখা ছিল। পড়ে সেটি দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এখনও এখানে অশোক স্তম্ভের নীচের অংশটি স্বযত্নে রাখা আছে। বর্তমানে এই জায়গাটির রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব অর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ্ ইন্ডিয়ার হাতে। এখানে গেলে অবশ্যই পাশের মিউজিয়ামটি ঘুরে আসবেন। বহু অমুল্য প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন রাখা আছে এই মিউজিয়ামের মধ্যে।

dhameka stupa, sarnath, varanasi, travel, history

ধামেক স্তূপ


sarnath, varanasi, travel, history

পালি ভাষায় খোদাই করা বাণী


dhameka stupa, sarnath, travel, varanasi

বৌদ্ধ স্তূপের ধ্বংসাবশেষ

সেবার হাতে সময় বেশি ছিল না। মাত্র ২ দিন ছিলাম বেনারসে। তবুও যতটা সম্ভব ঘুরেছিলাম। খুব ইচ্ছে ছিল বেনারসের বিখ্যাত গলি গুলো ঘুরে ঘুরে দেখব! এমনকি "জয় বাবা ফেলুনাথ" উপন্যাসের মগনলাল মেঘরাজের ডেরা সেই "কচৌড়ি গলির" সন্ধানেও যাবো। সময়ের অভাবে সেই গলি আর খোঁজা হয়ে ওঠেনি! আসলে এত অল্প সময়ের মধ্যে এইরকম ঐতিহাসিক একটা শহর পুরো ঘোরা হয়ে ওঠে না। তাই আবারও ফিরে যাব বেনারসে। অদেখা জায়গাগুলো ঘুরে দেখব। জানবো অনেক অজানা কাহিনী... অনুভব করবো ইতিহাস... সঞ্চয় করবো অনেক নতুন অভিজ্ঞতা!

ও হ্যাঁ.... সেবার বেনারস পর্ব শেষ করে পাড়ি দিয়েছিলাম নবাবদের শহর লখনৌ এর উদ্দেশ্যে। সেই গল্প নাহয় পরের বারের জন্য তোলা রইল।

Sunday, February 6, 2022

"অমর লতা, আমার কথা"

সেই কবে শক্তি চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন...

 "বুকের ভেতরে কিছু পাথর থাকা ভাল
চিঠি-পত্রের বাক্স বলতে তো কিছু নেই – 
পাথরের ফাঁক – ফোকরে রেখে এলেই কাজ হাসিল-
অনেক সময়তো ঘর গড়তেও মন চায় ।"

কিছু কিছু খবর, ঘটনা আরকি, মানার আগে-পরে বিশ্বাস করতে হয়, তবে তো মানার প্রশ্ন! যে মানুষ জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত; আমারই নয়, আমার মা-বাবা, মামা মামী, কাকা কাকীমা, দাদা বৌদি, বন্ধুবান্ধবদের বেলাতেও, পুজো পার্বণ, মেলা, উৎসব, বিয়েবাড়ি, প্রেমিকার সাথে, তিনি দুম করে নেই!! এটা হয় নাকি? 

মজরুহ্ সুলতানপুরীর লেখা "রহে ন রহে হম, মেহকা করেঙ্গে", এটা তো অবশ্যম্ভাবী, হ্যাঁ, যতদিন সুরের সপ্তক পৃথিবীতে খেলা করবে, এটাও থাকবে। ভাষা সুর পেয়েছে যাঁর কণ্ঠে, নবরস সঙ্কলিত হয়েছে যাঁর আত্মায়, যিনি প্রজন্মের পর প্রজন্মকে ভালোবাসার কথা ঠোঁটে ফোটাতে শিখিয়েছেন, তাঁর লয় নেই, ক্ষয় নেই!

বিরল কিছু মানুষ হন যাঁর বিস্তার সম্পর্কে বলা যায়না, কালের সীমা অতিক্রম করে চিরন্তন হয়ে যান। কবেকার কথা কিভাবে যুগের পরে যুগ ধরে সমৃদ্ধ করেছে, ভাবনারই বাইরে!! সেসময় গ্রামোফোন রেকর্ড চলতো, লং প্লেয়িং রেকর্ড ৭৮ আরপিএমের, আর আজ গান শুনি অত্যাধুনিক পডকাস্ট পদ্ধতিতে, আর মাঝের ক্যাসেট, কমপ্যাক্ট ডিস্ক, থেকে মোবাইলে, সবকিছুর বিবর্তনের সাথে উনি জড়িত, গানের মাধ্যমে! 

ইনি কতো গান গেয়েছেন, কতগুলো ভাষায়, কতজন সুরকার, গীতিকার, অভিনেত্রীর গলায় এঁর গান শোনা গেছে, ইনি শুরু করেছিলেন নিজেও পর্দায় অভিনয় দিয়ে, অথবা "আনন্দ ঘন" নামে সুর সৃষ্টি করেছেন, এরকম অজস্র কথা আছে, যা সবাই জানেন, আর সত্যি বলতে কি, এঁর সম্মন্ধে কি আছে যা জানিনা, বা বলে শেষ করা যায়? ঐ যে, শুরুতেই বললাম, কিছু কিছু ঘটনা বিশ্বাস করতেই মস্তিষ্কে ঢুকতেই চায়না, এইটেও এরকমই একটা ঘটনা! 

অনিল বিশ্বাস, সাজ্জাদ হোসেন, হুসনলাল–ভগতরাম, সি.এইচ. আত্মা, দত্তা নায়েক, গুরুশরণ সিং কোহলি, মনোহর অরোরা, লালা সাত্তার... বিস্মৃত নামগুলো আজও মনে পড়ে, কারণ এঁর গাওয়া গানে সুর দিয়েছিলেন এঁরা! বিপিন–বাবুল, স্বপন জগমোহন, সোনিক ওমি থেকে দিলীপ সেন–সমীর সেন, সমীর ট্যান্ডন..... সময়ের পরিধিতে রাখাই অসম্ভব! 

আজকে কিছু গুছিয়ে বলার দিন নয়, কারণ নিজেরই উচ্চারিত আজ "শায়দ ইস জনম মেঁ মুলাকাত হো না হো", সত্যি করে অমরলোক পাড়ি দিলেন লতা মঙ্গেশকর, কিন্তু শরীরটুকুই, আত্মা অনেক আগেই আমাদের মধ্যে চিরস্থায়ী করে রেখেছেন, আপনি ঘুমোন ❤️🙏